ঘি কিভাবে বানায়? ঘি তৈরি করতে কত লিটার দুধ লাগে?
ঘি, যা গরুর দুধ থেকে তৈরি একটি স্বাস্থ্যকর চর্বি, ভারতীয় এবং বাংলাদেশী রান্নায় একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় উপাদান। এটি কেবল একটি স্বাদবর্ধক উপাদান নয়, বরং এর পুষ্টিগুণও অনেক। এই নিবন্ধে আমরা ঘি তৈরির প্রক্রিয়া, উপকরণ এবং বিভিন্ন পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।
ঘি তৈরির উপকরণ
ঘি তৈরি করতে প্রয়োজনীয় প্রধান উপকরণ হলো:
- দুধ: পূর্ণ চর্বিযুক্ত দুধ সবচেয়ে ভালো।
- বাটার: আনসল্টেড বাটার ব্যবহার করা হলে ভালো।
- সর: দুধ থেকে আলাদা করা সর, যা ঘি তৈরির জন্য ব্যবহৃত হয়।
ঘি তৈরির পদ্ধতি
১. দুধ থেকে সর সংগ্রহ
ঘি তৈরির প্রথম ধাপ হলো দুধ থেকে সর আলাদা করা। এই প্রক্রিয়া সাধারণত নিম্নলিখিতভাবে সম্পন্ন হয়:
- দুধ জ্বাল করা: প্রথমে পূর্ণ চর্বিযুক্ত দুধকে একটি পাত্রে ঢেলে অল্প আঁচে জ্বাল দিতে হবে। দুধটি জ্বাল দেওয়ার সময় হালকা লাল রঙ ধারণ করবে এবং এর উপরে পাতলা সরের আস্তরণ তৈরি হবে।
- সর সংগ্রহ: দুধ ঠাণ্ডা হলে, একটি চামচের সাহায্যে উপরের সর তুলে নিতে হবে। এটি ফ্রিজে রেখে জমিয়ে রাখা যায়।
২. সরের মাখন তৈরি
সর সংগ্রহ করার পর, এটি মাখনে পরিণত করতে হবে:
- সর মিক্সিং: জমা করা সরকে একটি পাত্রে নিয়ে নারিকেলের পাতার সাথে মিশিয়ে মাখন তৈরি করুন। নারিকেলের পাতা ব্যবহার করলে ঘির স্বাদ আরও উন্নত হয়।
- মাখন প্রস্তুতি: মাখনটি পানিমুক্ত করে একটি স্টিলের বা লোহার কড়াইয়ে ঢেলে দিন।
৩. ঘি প্রস্তুতি
মাখন থেকে ঘি তৈরি করতে নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলি অনুসরণ করুন:
- গরম করা: কড়াইয়ে মাখন ঢেলে প্রথমে জোরে জ্বাল দিন এবং ক্রমশ আঁচ কমিয়ে আনুন।
- নাড়ানো: মাখনটি ক্রমাগত নাড়তে থাকুন। যত বেশি নাড়বেন, ঘি তত পরিষ্কার ও দ্রুত তৈরি হবে।
- ফেনা ওঠা: মাখন গলতে শুরু করলে ফেনা উঠবে। ফেনার রঙ বাদামী হয়ে গেলে বুঝবেন ঘি প্রস্তুত হচ্ছে।
- ছেঁকে নেওয়া: যখন ঘির রঙ সোনালী বা বাদামী হয়ে যায়, তখন এটি আঁচ থেকে নামিয়ে একটি পরিষ্কার পাত্রে ছেঁকে নিন।
- ঠাণ্ডা হওয়া: গরম ঘিকে ঠাণ্ডা হতে দিন এবং পরে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে রাখুন।
৪. বাটার ব্যবহার করে ঘি তৈরি
বাটার ব্যবহার করে ঘি তৈরির প্রক্রিয়া সহজ এবং দ্রুত:
- বাটার গলানো: ১ কাপ আনসল্টেড বাটারকে গরম প্যানে ঢেলে গলান।
- ফেনা ওঠা এবং নাড়ানো: বাটার গলে ফেনা উঠলে ধীরে ধীরে নাড়তে থাকুন।
- ফেনার রঙ বাদামী হলে নামানো: ফেনার রঙ বাদামী হয়ে গেলে এটি নামিয়ে ছেঁকে নিন।
শেষ কথা
ঘি তৈরি করা একটি সহজ প্রক্রিয়া এবং এটি স্বাস্থ্যকর খাদ্য হিসেবে বিবেচিত হয়। সঠিকভাবে তৈরি করা হলে, ঘি দীর্ঘ সময় ধরে সংরক্ষণ করা যায় এবং এটি বিভিন্ন রান্নায় ব্যবহার করা যায়। নিয়মিত ঘি খাওয়া শরীরের জন্য অনেক উপকারী, তবে পরিমাণের দিকে খেয়াল রাখা জরুরি।