নিয়মিত কোষ্টকাঠিন্য – পাইলস কিংবা কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি
বাংলাদেশে প্রতি ৩ জনে ১ জন ব্যক্তি কোষ্টকাঠিন্যে ভুগে থাকেন। দীর্ঘদিন অবহেলা করলে যা পাইলস এমনকি কোলন ক্যান্সারে রূপ নেয়। বাজে খাদ্যাভ্যাস, ধূমপান, পরিমিত পানি না খাওয়া, রাতে ঠিকমত ঘুম না হওয়া, ইত্যাদি নানা কারনে নিয়মিত কোষ্টকাঠিন্য হয়ে থাকে।
সপ্তাহে তিনবারের কম মলত্যাগ হলে তাকে কোষ্ঠকাঠিন্য বলে। পায়খানা পরিষ্কার না হওয়া, খুব শক্ত মল হওয়া, চিকন নালে মলত্যাগ হওয়া ইত্যাদি হলো কোষ্ঠকাঠিন্যের লক্ষণ। অপরিকল্পিত ডায়েট, অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস মূলত এর জন্য দায়ী। এ ছাড়া বংশগত, ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, অন্যান্য রোগ ইত্যাদি কিছু কিছু ক্ষেত্রে দায়ী।
কোষ্ঠকাঠিন্যে সময়মতো যথাযথ ব্যবস্থা না নিলে তা কোলন ক্যান্সারের আশঙ্কা বহুগুণ বাড়ায়।
বিভিন্ন সিরাপ জাতীয় ওষুধ খেয়ে দ্রুত প্রতিকার পাওয়া যায় সত্যিই। তবে বিশেষজ্ঞরা বলেন দীর্ঘদিন এসব ওষুধ খেলে শরীরের স্বাভাবিক ফাংশন ওষুধের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। অর্থাৎ, একসময় ওষুধ ছাড়া পায়খানা কোনভাবেই আর নরম হয় না।
যার ফলাফল দীর্ঘস্থায়ী কোস্টকাঠিন্য থেকে সৃষ্টি পাইলসের সমস্যা। সঠিক সময়ে অপারেশন না করালে যা রূপ নেয় কোলন ক্যান্সারে। তাই অবহেলা না করে সর্বাবস্থায় কোষ্টকাঠিন্য থেকে নিরাপদ থাকার চেষ্টা করতে হবে।
এর প্রতিকার কি?
অতিরিক্ত চা-কফি, সিগারেট, রেড মিট এড়িয়ে চলা, প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি খাওয়া, ফাইবার জাতীয় ও দ্রুত হজম হয় এমন খাবার খাওয়া কোষ্টকাঠিন্য প্রতিরোধ করে আপনাকে নিরাপদ রাখবে ইনশাআল্লাহ্। তবে কোষ্ট্যকাঠিন্য দেখা দিলে সিরাপ কিংবা ওষুধের উপর নির্ভরশীল না হয়ে প্রাকৃতিক রেসিপির সাহায্য নিয়েও দ্রুত প্রতিকার পাওয়া যায়।
এমনই একটি অত্যাধিক কার্যকরী রেমেডি হচ্ছে Ayurvedic Gut Care পাউডার যা আদা, মেথি, তেজপাতা, গোলমরিচ, বড় এলাচ, দারুচিনি, জৈনদেশি সহ ১০টিরও বেশি ঔষধি উপাদানের সংমিশ্রণে তৈরি। এটি নিশ্চিতভাবে ১-২০ ঘণ্টার মধ্যে কাজ করে এবং অস্বস্তি থেকে মুক্তি দেয়।
কোস্টকাঠিন্য থেকে আপনাকে সুস্থ রাখার পাশাপাশি ন্যাচারাল মেডিসিনাল ইনগ্রেডিয়েন্টস দিয়ে তৈরি Ayurvedic Gut Care আপনার পুরো ডাইজেস্টিভ সিস্টেমকে সারিয়ে তুলবে খুবই অল্প সময়ে।
কোস্টকাঠিন্য প্রতিরোধ ও প্রতিকার বিষয়ে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল হক মাসুম কিছু পরামর্শ দিয়েছেনঃ
যা করবেন না
- কোষ্ঠকাঠিন্যের আড়ালে অনেক সময় অনেক রকম রোগ থাকে। তাই একে অবহেলা করে চেপে রাখবেন না। দীর্ঘদিন ধরে কোষ্ঠকাঠিন্য থাকলে কোলন ও রেকটাল সার্জনের শরণাপন্ন হোন।
- পায়খানার বেগ এলে মলত্যাগে বিলম্ব করবেন না।
- দীর্ঘ সময় অলস সময় কাটাবেন না বা শুয়ে বসে থাকবেন না।
- প্রক্রিয়াজাত, দুগ্ধজাত ও মাংসজাত খাবার এড়িয়ে চলুন।
- বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ খাবেন না।
প্রতিরোধে করণীয়
- প্রত্যেকের ডায়েটে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার বা উচ্চ আঁশযুক্ত খাবার যেমন মটরশুঁটি, শাক-সবজি, ফল, গোটা শস্য, ভুসি ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত করুন।
- প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন (পূর্ণবয়স্করা প্রতিদিন ১০-১২ গ্লাস)।
- যতটা সম্ভব সক্রিয় থাকুন, কায়িক শ্রম দিন, নিয়মিত হাঁটাহাঁটি, ব্যায়াম করার চেষ্টা করুন। কেননা নিয়মিত কায়িক শ্রম বা ব্যায়ামে হজম শক্তি বাড়ে।
- মানসিক চাপ সম্পূর্ণরূপে পরিহার করুন।
- রাতে পর্যাপ্ত ঘুমানোর চেষ্টা করুন।
- প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে মলত্যাগের অভ্যাস করুন।